এটি প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ থেকে নেওয়া।
এর সমস্ত কৃতিত্ব প্রথম আলোর লেখক ও আলোকচিত্রির।
একবার আইনস্টাইন বলে বসলেন, কেউ যদি জীবনের ৩০ বছরের আগে বিজ্ঞানে তার সেরা অবদান না রাখতে পারে, তবে সে কোনো দিনও পারবে না। তাঁর সে কথাটি যদিও বেদবাক্যের মতো আঁকড়ে পড়ে থাকার কিছু নেই, তবে সেরাদের সেরারা কিন্তু ছোট থেকেই নিজেদের কারিশমা দেখাতে শুরু করেন। ফরাসি গণিতবিদ ব্লেইজ প্যাসকেল নয় বছর বয়সে প্রথম তত্ত্ব লিখেছিলেন। চার বছর বয়সে মেরি কুরি তাঁর ভাইবোনদের গণিতের ‘বাড়ির কাজ’ করে দিতেন। এই নামগুলো বলে শেষ করা যাবে না। দীর্ঘ সেই তালিকাটায় যেন দীর্ঘতর করতে চাইছে বিজ্ঞান জয়োৎসবের অংশগ্রহণকারী বন্ধুরা। রোবট, কাজের সফটওয়্যার, থ্রিডি প্রিন্টার থকে শুরু করে নিরাপত্তা সরঞ্জাম—কী তৈরি করেনি তারা! গত ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সিটি ব্যাংক-প্রথম আলো বিজ্ঞান জয়োৎসবে খুদে বিজ্ঞানীদের নানা উদ্ভাবন দেখা যায়। এই উৎসবে আসা কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে এই আয়োজন।
রোবট শেখে নিজে নিজে
দুর্যোগের সময় বা তার পরে উদ্ধারকাজে রোবটের ব্যবহার রয়েছে বটে, তবে ভিন্ন পরিস্থিতিতে রোবট নিজে থেকে কিছু করতে পারে না। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম, শায়েখ মো. শিথিল ও মো. তারেক হোসেনের দল চেষ্টা করে যাচ্ছে এমন কোনো কিছু তৈরি করতে, যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রোবট নিজ বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সমাধান বের করতে পারে। শরিফুল ইসলাম বলেছে, ‘ভিডিও ইমেজ প্রসেসিং নিয়ে কাজ করছি আমরা। ইউটিউব ভিডিও দেখে যেন রোবট শিখতে পারে সেই চেষ্টা করছি।’ শরিফুল পড়ছে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে এবং অপর দুই সদস্য পড়ছে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
থ্রিডি প্রিন্টার
স্বল্প খরচে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) প্রিন্ট নয়, বরং প্রিন্টার বানিয়ে দিতে পারবে এইচএসসি পরীক্ষার্থী তিন ছাত্র। তাদের দলনেতা সৌমেন দাস বলেছে, লোহার রড, কাঠের মতো স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় তৈরি করা যায় এটি। মেইন বোর্ড হিসেবে আরডুইনো ব্যবহার করা হয়েছে এতে। দলের অপর দুই সদস্য হলো শেখ শাফিন আহমেদ ও সাদমান সাকিব। তারা সবাই ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজে পড়ছে। বাংলাদেশে সবে থ্রিডি প্রিন্টারের প্রচলন হতে শুরু হলেও প্রথমবার কেউ তৈরি করে দেখাল।
বাড়ির নিরাপত্তাক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্র আহবাব আল মো. সিদ্দিকি ও জারিফ তাহমিদ তৈরি করেছে বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা। তাদের বাড়িতে একবার চুরি হওয়ার পর এই চিন্তা মাথায় আসে আহবাবের। দরজার সামনে লুকানো অবস্থায় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের সাহায্যে এই নিরাপত্তা যন্ত্র রাখা হয়। আহবাব বলল, এই নিরাপত্তাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এর খরচ কম। আর অনলাইনে যুক্ত না থাকায় এটি হ্যাক করাও সম্ভব নয়।
অতল জলের রোবট২০১৪ সালে পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল। সে দুর্ঘটনা নাড়া দেয় তরুণ রাফায়েত হুদার মনে। এদিকে তার বাবা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল হুদা ছেলেকে এমন কিছু করতে বলেন যা মানবকল্যাণে কাজে লাগবে। এরপরই আলী আরমান আলবী ও আহনাফ আহসানকে সঙ্গে নিয়ে কম খরচে আন্ডারওয়াটার রোবট তৈরির কাজ শুরু করে সে। রাফায়েত বলল, এই রোবটটি ১৬ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি সম্ভব। রাফায়েত ও আরমান পড়ছে দিনাজপুর স্কুল অব লিবারেটরসের নবম শ্রেণিতে, আহনাফ পড়ে ঢাকার আগা খান স্কুলে।
তিন চাকার ট্রলিবাড়ির লিফটটা মাঝেমধ্যে নষ্ট থাকায় বইয়ের ভারে নুইয়ে পড়া ছোট্ট ফারজানা তাবাসসুমের একদিন মাথায় এল কীভাবে সিঁড়ি বেয়ে সহজে ব্যাগটা টেনে তোলা যায়। সেখান থেকেই তিন চাকার ট্রলির ভাবনা আসে তার মাথায়। ফারজানা বলল, ‘আমার শিক্ষকেরা বলেছেন, তিন চাকার ওপর দিয়ে চেইনজাতীয় কিছু লাগিয়ে দিলে হয়তো এটি ভালো কাজ করবে। এখন সেটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’ প্রকল্পটি নিয়ে প্রায় তিন বছর হলো কাজ করছে সে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ফারজানা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।
রোবট শেখে নিজে নিজে
দুর্যোগের সময় বা তার পরে উদ্ধারকাজে রোবটের ব্যবহার রয়েছে বটে, তবে ভিন্ন পরিস্থিতিতে রোবট নিজে থেকে কিছু করতে পারে না। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. শরিফুল ইসলাম, শায়েখ মো. শিথিল ও মো. তারেক হোসেনের দল চেষ্টা করে যাচ্ছে এমন কোনো কিছু তৈরি করতে, যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রোবট নিজ বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সমাধান বের করতে পারে। শরিফুল ইসলাম বলেছে, ‘ভিডিও ইমেজ প্রসেসিং নিয়ে কাজ করছি আমরা। ইউটিউব ভিডিও দেখে যেন রোবট শিখতে পারে সেই চেষ্টা করছি।’ শরিফুল পড়ছে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে এবং অপর দুই সদস্য পড়ছে সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
থ্রিডি প্রিন্টার
স্বল্প খরচে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) প্রিন্ট নয়, বরং প্রিন্টার বানিয়ে দিতে পারবে এইচএসসি পরীক্ষার্থী তিন ছাত্র। তাদের দলনেতা সৌমেন দাস বলেছে, লোহার রড, কাঠের মতো স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় তৈরি করা যায় এটি। মেইন বোর্ড হিসেবে আরডুইনো ব্যবহার করা হয়েছে এতে। দলের অপর দুই সদস্য হলো শেখ শাফিন আহমেদ ও সাদমান সাকিব। তারা সবাই ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজে পড়ছে। বাংলাদেশে সবে থ্রিডি প্রিন্টারের প্রচলন হতে শুরু হলেও প্রথমবার কেউ তৈরি করে দেখাল।
বাড়ির নিরাপত্তাক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্র আহবাব আল মো. সিদ্দিকি ও জারিফ তাহমিদ তৈরি করেছে বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা। তাদের বাড়িতে একবার চুরি হওয়ার পর এই চিন্তা মাথায় আসে আহবাবের। দরজার সামনে লুকানো অবস্থায় অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের সাহায্যে এই নিরাপত্তা যন্ত্র রাখা হয়। আহবাব বলল, এই নিরাপত্তাব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এর খরচ কম। আর অনলাইনে যুক্ত না থাকায় এটি হ্যাক করাও সম্ভব নয়।
অতল জলের রোবট২০১৪ সালে পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল। সে দুর্ঘটনা নাড়া দেয় তরুণ রাফায়েত হুদার মনে। এদিকে তার বাবা হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল হুদা ছেলেকে এমন কিছু করতে বলেন যা মানবকল্যাণে কাজে লাগবে। এরপরই আলী আরমান আলবী ও আহনাফ আহসানকে সঙ্গে নিয়ে কম খরচে আন্ডারওয়াটার রোবট তৈরির কাজ শুরু করে সে। রাফায়েত বলল, এই রোবটটি ১৬ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি সম্ভব। রাফায়েত ও আরমান পড়ছে দিনাজপুর স্কুল অব লিবারেটরসের নবম শ্রেণিতে, আহনাফ পড়ে ঢাকার আগা খান স্কুলে।
তিন চাকার ট্রলিবাড়ির লিফটটা মাঝেমধ্যে নষ্ট থাকায় বইয়ের ভারে নুইয়ে পড়া ছোট্ট ফারজানা তাবাসসুমের একদিন মাথায় এল কীভাবে সিঁড়ি বেয়ে সহজে ব্যাগটা টেনে তোলা যায়। সেখান থেকেই তিন চাকার ট্রলির ভাবনা আসে তার মাথায়। ফারজানা বলল, ‘আমার শিক্ষকেরা বলেছেন, তিন চাকার ওপর দিয়ে চেইনজাতীয় কিছু লাগিয়ে দিলে হয়তো এটি ভালো কাজ করবে। এখন সেটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’ প্রকল্পটি নিয়ে প্রায় তিন বছর হলো কাজ করছে সে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ফারজানা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে।
আঞ্চলিক ভাষার ডিজিটাল অভিধান
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রণীত বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান কেন্দ্র করে রাজধানীর শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের দশম শ্রেণির তিন ছাত্র মো. তালহা চৌধুরী, গাজী তাওসীফ তুরাবি ও মাহমুদুজ্জামানের দল ‘আপেক্ষিক’ তৈরি করেছে আঞ্চলিক ভাষার ডিজিটাল অভিধান। দলনেতা তালহা বলল, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ৩০০ শব্দ যোগ করতে পেরেছি। আরও কাজ চলছে। এক হাজার শব্দের বেশি হলে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়তে পারব। ইতিমধ্যে কপিরাইটের জন্য আবেদন করেছি।’