কল্পনা থেকে বাস্তব, কোয়ান্টাম কম্পিউটার !


কাসিক কম্পিউটার ও কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য এবং মানবসভ্যতার কল্যাণে এর কিছু ব্যবহারিক দিক রয়েছে। 
কাসিক্যাল কম্পিউটার পরিচালিত হয় বাইনারি লজিক অনুসারে। বাইনারি লজিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় বাইনারি ডিজিট অর্থাৎ বিট।
বিট গঠনের জন্য দরকার শুধু দু’টি সংখ্যাÑ শূন্য ও এক। শূন্য ও এক দ্বারা যথাক্রমে একটি সুইচের বন্ধ ও চালু দশা বোঝানো হয়। 
সুইচগুলো আবার ট্র্যান্সিস্টর নামেও পরিচিত। 
কম্পিউটার তৈরিতে এ রকম অসংখ্য ট্র্যান্সিস্টর ব্যবহার করা হয়। একটি মডার্ন ল্যাপটপে প্রায় ২ বিলিয়নেরও বেশি ট্র্যান্সিস্টর আছে। 
তার মানে, একটি সাধারণ কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ার নির্ভর করে ব্যবহৃত ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যার ওপর। 
বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী, প্রতি দুই বছরে ট্র্যান্সিস্টরের সংখ্যাও দিগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
এই ধারা বজায় থাকলে নিকট ভবিষ্যতে মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পে অস্বাভাবিক সংখ্যার ট্র্যান্সিস্টর সংযোজন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। 
মূলত এই অসুবিধার কথা বিবেচনা করে চিরস্থায়ী সমাধান হিসেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের কথা ভাবা হয়। 
কোয়ান্টাম সিস্টেম কাসিক সিস্টেমের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। কাসিক বিটের পরিবর্তে কোয়ান্টাম কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয় কোয়ান্টাম বিট, যেটা কিউবিট নামেও পরিচিত। 

মজার ব্যাপার হলো, এই কিউবিট একই সাথে শূন্য ও এক উভয়ের মতো আচরণ করতে পারে। বস্তুর ুদ্রতম কণা, যেমনÑ ফোটন, নিউকিয়াস, ইলেকট্রন ইত্যাদিকে কিউবিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 

উদাহরণস্বরূপ একটি ইলেকট্রনের কথা বিবেচনা করা যাক। প্রতিটি ইলেকট্রন একেকটি অতি ক্ষুদ্র চুম্বক হিসেবে আচরণ করে। 
তাই চুম্বকীয় ক্ষেত্রের ধর্ম অনুযায়ী, এটি উত্তর-দক্ষিণ মেরু বরাবর অবস্থান করবে। 

ইলেকট্রনের এই বিশেষ ধর্ম ইলেকট্রন স্পিন নামে পরিচিত। 
কাসিক বিটের সাথে তুলনা করলে আমরা ঊর্ধ্বমুখী স্পিনকে এক ও নি¤œমুখী স্পিনকে শূন্য হিসেবে বিবেচনা করতে পারি।

কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, 
স্বাভাবিক অবস্থায় একটি ইলেকট্রন যুগপৎভাবে ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী দুই অবস্থায়ই থাকতে পারে। 

তার মানে, একই সাথে শূন্য ও এক হিসেবে আচরণ করে। 
কোয়ান্টাম বস্তুকণার এই ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ঠ্যকে বলা হয় কোয়ান্টাম সুপারপজিশন। 
এ পদ্ধতিতে যেহেতু দু’টি ডিজিট একটির মতো আচরণ করে, 
সেহেতু প্রসেসরের লজিক্যাল ইউনিট অতি দ্রুত যেকোনো জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে। 
কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সফল বাণিজ্যিক উৎপাদন প্রযুক্তি খাতে আনতে পারে নানামুখী পরিবর্তন।


Related Posts
Previous
« Prev Post

মোট পাতাদর্শিত